Thursday, May 16, 2024
39.8 C
Rajshahi
spot_img
হোমলাইফস্টাইলজোরে নাকি আস্তে, কীভাবে পড়লে পড়া মুখস্থ হয়?

জোরে নাকি আস্তে, কীভাবে পড়লে পড়া মুখস্থ হয়?

ছোটবেলায় যখন মনে মনে স্কুলের বই পড়া হতো, তখন মা বলতেন জোরে জোরে আওয়াজ করে পড়তে। কারণ, এতে নাকি পড়া মনে থাকে। সত্যিই কি তাই? শব্দ করে পড়লেই বুঝি পড়া মুখস্থ হয়? এ ছাড়া সারা দিন ঘুমের দেখা নেই, অথচ যেই-না বই নিয়ে পড়তে বসা হয়, তখনই চোখ জুড়ে নেমে আসে রাজ্যের ঘুম। কেন হয় এমনটা? এসবের পেছনে কারণই-বা কী?

পড়ার ক্ষেত্রে মূলত দুটি নিয়ম অনুসরণ করা হলেও বেশির ভাগ শিক্ষার্থীই মনে মনে পড়তে পছন্দ করেন। কিন্তু গবেষকরা বলছেন, এভাবে পড়ার কারণে বেশ কিছু সুবিধা থেকে বঞ্চিত হতে হয়। জোরে আওয়াজ করে পড়লে স্মৃতিশক্তি আরও উন্নত হয়। এ ছাড়া পঠিত বিষয়বস্তু নিজ চোখে দেখার পাশাপাশি শব্দগুলো যখন কানে প্রবেশ করে, তখন জটিল বিষয়গুলো আরও ভালোভাবে মনে গেঁথে যায়। মোটকথা, আওয়াজ করে পড়লে পড়া মনে থাকে ভালো। যাকে বলা হয় ‘প্রোডাকশন ইফেক্ট’।

এ ছাড়াও মনে মনে বই পড়লে বিশেষ আরেকটি সুবিধা থেকে বঞ্চিত হতে হয়। আর তা হলো শব্দের সঠিক উচ্চারণ সম্পর্কে না জানা। তাই উচ্চারণ শুদ্ধ রাখতে আওয়াজ করে পড়ার বেশ সুফলও রয়েছে। আবার কারো তোতলামির সমস্যা থাকলে, আওয়াজ করে পড়লে সেই সমস্যাও অনেকাংশে দূর হয়। যদিও আওয়াজ করে পড়ার কারণে পড়ার গতি কিছুটা হলেও কমে যায়।

এমন অনেকেই আছেন, পড়তে বসলেই যাদের বেশ ঘুম পায়। এর পেছনেও রয়েছে বৈজ্ঞানিক কিছু কারণ। প্রথমত, পড়তে গেলে চোখ সবসময় বইয়ের পাতায় রাখতে হয় এবং প্রতি মুহূর্তে চোখ ডানে-বাঁয়ে ঘোরাতে হয়। এ ছাড়া চোখ বইয়ে যা দেখে, সেগুলোর মাধ্যমে মস্তিষ্ককে অর্থবোধক শব্দ, বাক্য ও অনুচ্ছেদও তৈরি করে নিতে হয়, এবং সেগুলো দ্বারা কী বোঝানো হচ্ছে, তা-ও অনুধাবন করতে হয়।

এভাবে পড়ার সময় ক্রমাগত নাড়াচাড়ায় চোখের পেশি যেমন ক্লান্ত হয়ে পড়ে, তেমনই একসঙ্গে অনেক কাজ করতে গিয়ে মস্তিষ্কও হাঁপিয়ে ওঠে। তখন চোখ ও মস্তিষ্ক উভয়েরই বিশ্রামের প্রয়োজন পড়ে। তাই ধীরে ধীরে চোখের পাতা ভারী হয়ে আসে এবং মস্তিষ্কে ঘুমের প্রয়োজনীয়তা উপলব্ধ হতে থাকে।

অনেকেই শুয়ে শুয়ে বই পড়েন, কেউ আবার বিশ্রামের ভঙ্গিতে শরীর এলিয়ে দিয়ে পড়েন। কেননা, তাদের কাছে মনে হয়, এভাবে পড়লে পড়া সহজ হবে। তবে শরীরকে যখন এমন আরামদায়ক পরিবেশে রাখা হয়, তখন মস্তিষ্ক ধরেই নেয় যে, এখন সময় কেবল বিশ্রামের। এ সময় যদি পড়ার মতো মানসিক পরিশ্রমের কাজটি করা হয়, তখন মস্তিষ্ক বিদ্রোহ করে বসে। ফলে অতিরিক্ত ক্লান্তি ও ঘুম ঘুম ভাব অনুভূত হয়।

এ তো গেল বই পড়া আর ঘুমের মধ্যকার মিষ্টি-মধুর সম্পর্কের গল্প, যা কিনা একজন বই পাঠকের মহাবিরক্তির কারণ। তবে, পড়তে বসে ঘুম চলে আসার এ সমস্যা থেকে পরিত্রাণের কিছু উপায় রয়েছে। এই যেমন, পড়ার ঘরটিকে আলোকিত রাখা। শুয়ে-বসে নয়, চেয়ারে বসে পড়া। পড়াশোনার আগে ভারি খাবার না খাওয়া। আওয়াজ করে পড়া। সম্ভব হলে গ্রুপ স্টাডি করা। এ ছাড়া তন্দ্রাভাব কাটাতে পান করা যেতে পারে চা কিংবা কফিও।

স্বাধীন জনপদের সাথেই থাকুন

সম্পর্কিত সংবাদ

স্বাস্থ্যকথা

- Advertisment -

ইসলাম